শাকিব খান - নকলের গোলক ধাঁধাঁয়


ঢাকাই সিনেমা নিয়ে যখন অনেকেই আশার বীজ বুনতে শুরু করেছেন তখনই অচমকা আশনী সংকেত। সকল স্বপ্ন, সম্ভাবনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ঢাকাই সিনেমা নকল ছবির নোংরা থাবায় আটকা পড়ছে বলেই অভিমত চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের।

ছবির গল্প থেকে শুরু করে, সংলাপ, দৃশ্য, অ্যাকশন এমন কি পোস্টারেও নকলের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে হরহামেশাই। এ নিয়ে প্রায়ই সমালোচনা, বিতর্কের ঝড় উঠছে সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম থেকে গণমাধ্যমেও। সেই পালেই যেন হাওয়া দিচ্ছেন খ্যাতিমান তারকা শাকিব খান।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নাম্বার ওয়ান খ্যাত চিত্রনায়ক শাকিব খান। গত কয়েক বছর ধরে তার অভিনীত সিনেমা দুই ঈদে মুক্তি পেয়ে আসছে নিয়ম করে। এ সব সিনেমাগুলোর অধিকাংশই তামিল অথবা হিন্দী সিনেমার নকল। তাই অনেকে প্রকাশ্যেই বলছেন- ‘শাকিব খান মানেই কি তাহলে নকল সিনেমা?’ এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুব বেশি পরিশ্রম করার প্রয়োজন নেই। শুধু এ নায়ক অভিনীত গত কয়েক বছরে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোর দিকে মুখ ফেরালেই হয়!

গত বছরের ঈদুল ফিতরে শাকিব খান অভিনীত হিরো দ্য সুপার স্টার সিনেমাটি মুক্তি পায়। সিনেমাটি তামিল সিনেমার নকল ছিল। একই বছরের ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া তার হিটম্যান সিনেমাটিও নকল বলে জানা যায়।  ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া তামিল সিনেমা ভিটাই-এর কার্বন কপি হিটম্যান।

 

এ সব সিনেমাগুলো নকল হওয়া সত্যেও সেন্সর বোর্ডের কোনো বাধা ছাড়াই আনকাট ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে যেন কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রযোজক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এর আগে বাংলার ফাটাকেষ্ট শিরোনামের একটি ছবি নকলের অভিযোগে সেন্সর বোর্ড আটকে দেয়। সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে যদি এই সব বিগ বাজটের ছবিগুলোর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেন তাহলে এই নকলবাজদের হাত থেকে দেশের সিনেমা রেহাই পাবে।’

শাকিব খান কেন বার বার নকল সিনেমায় অভিনয় করছেন? এক অনুষ্ঠানে শাকিব খানকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এর উত্তরে বলেন, ‘বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডে থেকে ৬০ ভাগ দৃশ্যের কপি করার অনুমতি রয়েছে। ২০-৩০ ভাগ দৃশ্য মিল থাকতেই পারে। এতে ক্ষতির কি।’এমন মন্তব্যকে যেন নিয়ম হিসেবে মেনে চলছেন এ নায়ক।

সেই ধারবাহিকতায় আসছে ঈদে মুক্তি প্রতিক্ষিত রাজা বাবু  দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার নকল বলে অভিযোগ উঠেছে। সিনেমাটি তৈরি করেছেন গুণী নির্মাতা বদিউল আলম খোকন। রাজা বাবুতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন অপু বিশ্বাস ও ববি।

চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছে, সিনেমাটি ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া তামিল সিনেমা ডাম্মু থেকে নকল করা হয়েছে। সিনেমাটিতে  জুনিয়র এনটিআর এর বিপরীতে অভিয়ন করেছেন তৃষা কৃষ্ণা ও কার্তিকা নায়ের।


জানা গেছে, রাজা বাবু সিনেমার দৃশ্য, গল্পের পাশাপাশি পোস্টারেও নকলের মিল পাওয়া গেছে।

সূত্রটি রাইজংবিডিকে জানান, ‘তামিল ডাম্মু সিনেমা থেকে রাজা বাবু সিনেমার গল্প নেওয়া হয়েছে। ডাম্মু সিনেমায় একজন নায়ক আর দুজন নায়িকা নেয়া হয়েছে।  এই ছবিতেও একজন নায়ক ও দুজন নায়িকা রয়েছে। এ ছাড়া সিনেমাটির দৃশ্য ও স্টাইলগুলোও ডাম্মুর সঙ্গে মিলে যায়।’এ দিকে ঈদের আরেক সিনেমার ক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে একই অভিযোগ।

সব মিলিয়ে শাকিব খান যেন বারবার নকল সিনেমার গোলক ধাঁধাঁয় ঘুরপাক খাচ্ছেন। যদিও দেশের চলচ্চিত্রের হারানো গৌরব ফিরে পেতে মৌলিক গল্পের চলচ্চিত্র তৈরি করতে হবে বারবারই এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুতরাং এখনই যদি নকলের গোলক ধাঁধাঁ থেকে আমাদের সিনেমাগুলো বের হতে না পারে তাহলে আসছে দিন যে খুব একটা ভালো হবে তা বলা মুশকিলই বটে।

, , ,

কোন মন্তব্য নেই: